ভ্যানহেলসিং (২০০৪) মুভি রিভিউ। Vanhelsing (2004) Movie Review

jamiul haque
4 minute read
0

 Van Helsing (2004): এক অ্যাকশন-হরর মাস্টারপিস

Van Helsing (2004) মুভিটি  হরর, অ্যাকশন এবং ফ্যান্টাসির এক চমৎকার মিশ্রণ। স্টিফেন সামার্স পরিচালিত এই সিনেমাটি ইউনিভার্সাল পিকচার্সের ক্লাসিক দানব চরিত্রগুলোকে আধুনিক রূপ দিয়ে উপস্থাপন করে। সিনেমার প্রধান চরিত্র গ্যাব্রিয়েল ভ্যান হেলসিং, যিনি শিকারি হিসেবে বিশ্বজুড়ে অতিপ্রাকৃত দানবদের খুঁজে বের করেন এবং ধ্বংস করেন।



Van Helsing মুভির তথ্য

পরিচালনা: স্টিফেন সামার্স
প্রযোজনা: স্টিফেন সামার্স, বব ডুকসে
লেখক: স্টিফেন সামার্স
অভিনয়ে: হিউ জ্যাকম্যান, কেট বেকিনসেল, রিচার্ড রক্সবার্গ, ডেভিড ওয়েনহাম
ধরন: অ্যাকশন, অ্যাডভেঞ্চার, হরর, ফ্যান্টাসি
মুক্তি: ৭ মে, ২০০৪
রানটাইম: ১৩১ মিনিট
ভাষা: ইংরেজি



মুভির কাহিনি বিস্তারিত

মুভিটি শুরু হয় ১৮৮৭ সালের ট্রান্সিলভানিয়াতে, যেখানে ড. ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন তার বিখ্যাত দানব তৈরি করেছেন। কিন্তু তার অভিভাবক হিসেবে পরিচিত কাউন্ট ড্রাকুলা আসলেই তাকে ব্যবহার করতে চায় এক ভয়ঙ্কর উদ্দেশ্যে—তার নিজের মৃত সন্তানদের পুনর্জীবিত করার জন্য। ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের দানব পালিয়ে যায় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই স্থানীয় গ্রামবাসীরা ড. ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের ল্যাবে আগুন লাগিয়ে দেয়। যদিও সবাই মনে করে দানবটি মারা গেছে, সে গোপনে বেঁচে থাকে।

পরবর্তীতে গল্প এগিয়ে আসে প্যারিসে, যেখানে গ্যাব্রিয়েল ভ্যান হেলসিং (হিউ জ্যাকম্যান) নটর ডেম ক্যাথেড্রালে বসবাসকারী দানব মি. হাইডকে হত্যা করেন। তিনি একজন বিশেষ শিকারি, যিনি দানব ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ভ্যাটিকানের এক গোপন সংস্থা তাকে ডেকে পাঠায় এবং তাকে জানানো হয় যে তার পরবর্তী মিশন ট্রান্সিলভানিয়াতে।

ট্রান্সিলভানিয়ায় ভ্যান হেলসিং

ভ্যান হেলসিং ও তার সহযোগী কার্ল (ডেভিড ওয়েনহাম), যিনি একজন বিজ্ঞানী ও অস্ত্র বিশেষজ্ঞ, ট্রান্সিলভানিয়ায় পৌঁছান। তারা জানতে পারেন যে ভ্যালেরিয়াস পরিবার বহু বছর ধরে ড্রাকুলার বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং এই পরিবার নিশ্চিহ্ন হলে তাদের আত্মারা নরকে বন্দি থাকবে। পরিবারের শেষ উত্তরসূরি অ্যানা ভ্যালেরিয়াস (কেট বেকিনসেল) এখনো বেঁচে আছেন, কিন্তু তার ভাই ভেলকান কিছুদিন আগে নিখোঁজ হয়েছেন।

ভ্যান হেলসিং সেখানে পৌঁছানোর পরপরই ড্রাকুলার তিন স্ত্রী গ্রামে আক্রমণ চালায়, কিন্তু ভ্যান হেলসিং ও অ্যানা তাদের প্রতিহত করতে সক্ষম হন। ভেলকান, যিনি আসলে এক নেকড়ে মানব হয়ে গেছেন, ড্রাকুলার পক্ষে লড়াই করছেন।

ড্রাকুলার ষড়যন্ত্র

ড্রাকুলা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছে তার মৃত সন্তানদের পুনর্জীবিত করতে, কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হচ্ছে। একমাত্র ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের দানবের শরীরেই এমন শক্তি রয়েছে যা তার সন্তানদের বাঁচাতে পারে। তাই ড্রাকুলা ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের দানবকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।

ভ্যান হেলসিং ও অ্যানা জানতে পারেন যে দানবটি আসলে জীবিত এবং একটি দুর্গের নিচে লুকিয়ে আছে। তারা তাকে খুঁজে বের করে এবং সিদ্ধান্ত নেয় তাকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে হবে, যাতে ড্রাকুলা তাকে ব্যবহার করতে না পারে। কিন্তু পথে তারা ড্রাকুলার গুন্ডাদের দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং দানবটি বন্দি হয়ে যায়।

চূড়ান্ত যুদ্ধ

ভ্যান হেলসিং জানতে পারেন যে ড্রাকুলাকে পরাজিত করার একমাত্র উপায় হলো একজন নেকড়ে মানবের কামড়ে তাকে হত্যা করা। কিন্তু সমস্যা হলো, ভ্যান হেলসিং নিজেই নেকড়ে মানবের অভিশাপে আক্রান্ত হন এবং ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকেন।

অবশেষে, ভ্যান হেলসিং ড্রাকুলার দুর্গে প্রবেশ করেন এবং এক চূড়ান্ত যুদ্ধে লিপ্ত হন। তার শরীর পুরোপুরি নেকড়ে মানবের রূপ ধারণ করে এবং সে ড্রাকুলাকে এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধে হত্যা করতে সক্ষম হয়। এদিকে, কার্ল অ্যানাকে রক্ষা করার চেষ্টা করে, কিন্তু অ্যানা দুর্ঘটনাবশত ভ্যান হেলসিংয়ের হাতে নিহত হন।

যুদ্ধ শেষ হলে, ভ্যান হেলসিং তার অভিশাপ থেকে মুক্তি পায়, কিন্তু অ্যানার মৃত্যুতে ব্যথিত হয়। শেষ দৃশ্যে দেখা যায়, অ্যানার আত্মা মুক্ত হয়ে স্বর্গে চলে যায়, আর ভ্যান হেলসিং দানব শিকারের জন্য নতুন অভিযানে রওনা দেন।

প্রধান চরিত্র ও অভিনয়

গ্যাব্রিয়েল ভ্যান হেলসিং (হিউ জ্যাকম্যান): রহস্যময় দানব শিকারি, যিনি তার অতীত সম্পর্কে অল্পই জানেন।
অ্যানা ভ্যালেরিয়াস (কেট বেকিনসেল): সাহসী ও দৃঢ়চেতা নারী, যে তার পরিবারের সম্মান রক্ষা করতে চায় এবং ড্রাকুলাকে ধ্বংস করার সংকল্প নেয়।
কাউন্ট ড্রাকুলা (রিচার্ড রক্সবার্গ): ভয়ঙ্কর ও শক্তিশালী ভ্যাম্পায়ার লর্ড, যে অমরত্ব এবং দানবদের উপর নিয়ন্ত্রণ চায়।
কার্ল (ডেভিড ওয়েনহাম): ভ্যাটিকানের একজন মোনাসটিক সায়েন্টিস্ট, যে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে ভ্যান হেলসিংকে সাহায্য করে।
ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের দানব (শুলার হেনসলি): ড্রাকুলার পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এক দানব, যার মধ্যে মানবিক অনুভূতি বিদ্যমান।

Van Helsing-এর বিশেষত্ব

ভিজ্যুয়াল এফেক্টস: উন্নতমানের CGI ব্যবহার করা হয়েছে, বিশেষ করে ভ্যাম্পায়ার ও নেকড়ে মানবের রূপান্তরের দৃশ্যগুলো দারুণভাবে তৈরি করা হয়েছে।
গথিক অ্যাটমোসফিয়ার: অন্ধকারাচ্ছন্ন ক্যাসল, ভয়ঙ্কর দানব, এবং রহস্যময় পরিবেশ সিনেমাটিকে এক অনন্য অভিজ্ঞতা দিয়েছে।
অ্যাকশন-প্যাকড কাহিনি: প্রতিটি দৃশ্যে উত্তেজনা ও ধ্বংসযজ্ঞ বিদ্যমান, যা দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখে।
ক্লাসিক হরর চরিত্রের পুনর্জাগরণ: ড্রাকুলা, ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের দানব, নেকড়ে মানব—এদের নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করা হয়েছে।

উপসংহার

Van Helsing (2004) এমন একটি সিনেমা, যা অ্যাকশন ও হরর প্রেমীদের জন্য দারুণ এক বিনোদন। চমৎকার ভিজ্যুয়াল, উত্তেজনাপূর্ণ অ্যাকশন, এবং আইকনিক দানব চরিত্রের উপস্থিতি মুভিটিকে বিশেষ করে তুলেছে। আপনি যদি রহস্যময় দুনিয়া, দানব, এবং অ্যাডভেঞ্চারের সমন্বিত একটি সিনেমা দেখতে চান, তাহলে Van Helsing আপনার জন্য সেরা পছন্দ হতে পারে!


যারা দেখেননি তারা দেখে নিতে পারেন। ইউটিউবে সার্চ দিন van helsing full movie তাহলে মুভিটি খুজে পাবেন। আর যদি মুভিটির বাংলা ডাবিং দেখতে চান তাহলে তাহলে জনি ভাইয়ের গুগল ড্রাইভের লিঙ্ক থেকে দেখতে বা  ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

আপনি কি এই মুভিটি দেখেছেন? আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না! 

Tags:

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)