শিক্ষামুলক গল্প জ্ঞানী বাবার উপহার

jamiul haque
2 minute read
0

 ভূমিকা


প্রতিদিনের ছোট ছোট ঘটনাগুলো আমাদের জীবনে বড় শিক্ষা দিয়ে যায়। আজকের গল্পটি এমন এক কিশোরকে নিয়ে, যে বিজ্ঞানকে ভালোবাসলেও ধৈর্যের অভাবে মাঝেমধ্যেই হাল ছেড়ে দিত। কিন্তু একদিন তার বাবা তাকে এমন এক উপহার দিলেন, যা তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিল।




গল্প শুরু


রাফি ছিল অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র। সে বিজ্ঞানকে খুব ভালোবাসত, বিশেষ করে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যা। কিন্তু একটি সমস্যা ছিল—যেকোনো পরীক্ষা বা গবেষণায় ব্যর্থ হলেই সে হতাশ হয়ে পড়ত। একবার স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় সে একটি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার তৈরির প্রকল্প জমা দিয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষার দিন সেটি কাজ করল না। রাফি খুব কষ্ট পেয়ে বলল,


— "আমি আর বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করব না! আমি কখনো সফল হব না!"


তার বাবা ছিলেন একজন ইলেকট্রনিকস প্রকৌশলী। তিনি রাফির হতাশা দেখে হাসলেন এবং বললেন,


— "আমি তোমাকে একটা উপহার দেব। তবে শর্ত একটাই—তুমি এটি এক সপ্তাহ ধরে ব্যবহার করবে, তারপর তোমার মতামত জানাবে।"


রাফি কৌতূহলী হয়ে বলল,


— "কী উপহার?"


তার বাবা তাকে একটি ছোট্ট পেনড্রাইভের মতো ডিভাইস দিলেন। সেখানে একটি মাত্র বোতাম ছিল। বাবা বললেন,


— "এটি হলো ‘স্মার্ট লার্নিং বোতাম’। যখনই তুমি কোনো সমস্যায় পড়বে, এই বোতাম চাপবে, আর এটি তোমাকে সঠিক সমাধান জানিয়ে দেবে।"


রাফি আনন্দে লাফিয়ে উঠল। "এত সহজ!"


পরীক্ষা ও উপলব্ধি


পরদিন স্কুলে গিয়ে রাফি প্রথমেই গণিত পরীক্ষার সময় বোতাম চেপে দিল। কিন্তু কিছুই ঘটল না!


বাসায় ফিরে এসে সে একটি বিজ্ঞানের সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে আবার বোতাম চাপল। এবারও কিছুই ঘটল না!


এভাবে কয়েক দিন ধরে রাফি বোতামটি চাপতে থাকল, কিন্তু সেটি কোনো উত্তর দিচ্ছিল না। অবশেষে সে বিরক্ত হয়ে বাবার কাছে গেল।


— "এই বোতাম তো কোনো কাজই করে না!"


তার বাবা হাসলেন এবং বললেন,


— "বসো, তোমার জন্য একটা প্রশ্ন আছে। গত এক সপ্তাহে তুমি এই বোতাম ব্যবহার করার সময় কী করেছ?"


রাফি চিন্তা করে বলল,


— "প্রথমে তো বোতাম টিপে উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। যখন কাজ করছিল না, তখন বাধ্য হয়ে নিজেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছি। ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম, প্রতিটি সমস্যার সমাধান খুঁজতে একটু ধৈর্য ধরতে হয়। আর হ্যাঁ, আমি নিজেই সমস্যার উত্তর বের করতে শিখেছি!"


তার বাবা মৃদু হেসে বললেন,


— "এই বোতামটি আসলে কিছুই করে না। কিন্তু এটি তোমাকে ধৈর্য ধরতে শিখিয়েছে, সমস্যার সমাধান নিজের মাথা খাটিয়ে বের করতে বাধ্য করেছে। সেটিই ছিল আমার মূল উদ্দেশ্য!"


রাফির চোখ দুটো উজ্জ্বল হয়ে উঠল। সে বুঝতে পারল, ধৈর্য আর পরিশ্রম ছাড়া কোনো কিছু শেখা সম্ভব নয়।


শিক্ষা


এই গল্প থেকে আমরা শিখতে পারি যে সফলতা পাওয়ার সহজ কোনো রাস্তা নেই। প্রযুক্তি, বিজ্ঞান কিংবা জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রে ধৈর্য আর প্রচেষ্টাই আমাদের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।



---


শেষ কথা

আপনি যদি কোনো কাজে ব্যর্থ হন, তাহলে হাল ছেড়ে দেবেন না। সমস্যার গভীরে যান, সমাধান খুঁজুন। একদিন ঠিকই সফল হবেন!

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)